ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন নিয়ে আর্টিকেল

ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা (যা মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী বাংলাদেশ নামেও পরিচিত) থেকে প্রকাশিত দাওয়াত ও আত্মশুদ্ধিমূলক সাময়িকী “মাসিক আলআবরার” এ মুফতী শরিফুল আযম ধারাবাহিকভাবে ইসলামের মূলনীতির সাথে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের সংঘর্ষ নিয়ে ধারাবাহিক প্রবন্ধ লিখেছেন। প্রবন্ধগুলো পিডিএফ ফাইলে করে পর্বানুসারে এখানে ধারাবাহিকভাবে লিপিবদ্ধ করা হল।

26 thoughts on “ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন নিয়ে আর্টিকেল

  1. পিংব্যাকঃ কোয়ান্টাম মেথড ও প্রতারণা | QuranerAlo.com – কুরআনের আলো ইসলামিক ওয়েবসাইট

  2. লেখককে তার এমন জ্ঞানগর্ভ ও লম্বাধৈর্যের পরিচায়ক লেখ্যকর্মটি সম্পাদন ও প্রকাশ করার জন্য সাধুবাদ জানাই। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামী শিক্ষা-সংস্কৃতি-ইতিহাস বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করেছি তার আগে অনার্সও করেছি। ব্যক্তিগতভাবে আশৈশব বাস্তব ইসলামী চর্চাকারী মুসলিম। তবে গোঁড়া নই।
    লেখার মধ্যে সামান্য কিছু সত্য ও সঠিক বিষয় অর্ন্তভূক্ত থাকলে ভালো হত। বোঝাই যাচ্ছে লেখাটার এবং লেখকের উক্ত কোর্স করার বিশেষ উদ্দেশ্যই ছিল কোয়ান্টামের কি কি সমালোচনা করা যায় তা পুঙ্খানুপুঙ্খ খোঁজ খবর করা এবং উদ্দেশ্যটা খুবই সংকীর্ণ। লেখককে আল্লাহ সত্যান্বেষণে সাহায্য করুন, এই দোয়া করি। কবি নজরুলকেও অনেক সমালোচনা করা হয়। কিন্তু তার ইসলামী সঙ্গীত ও সাহিত্যের মাধ্যমে সর্বশ্রেণীর মানুষ বেশী ইসলামের প্রতি অনুপ্রাণীত হয়েছে। কোয়ান্টামের প্রতি এর থেকে অনেক বেশী তীব্র ও ক্ষুরধার সমালোচনা আগে হয়েছে। কিন্তু সত্য সত্যই। তা সামনে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। একজন ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতির ছাত্র হিসেবে কোন দিন কোন ইসলাম বিরোধী কিছু কোয়ান্টামে দেখি নি। অনেক ধর্মীয় সংগঠনের উচ্চতর নেতা এ কোর্সের এমন সমালোচনা করুর অভিপ্রায় নিয়ে কোর্স করতে এসে এর একনিষ্ঠ কর্মী হয়ে গেছেন এবং পূর্বেরটা তৎক্ষণাৎ ত্যাগ করে নাউজুবিল্লাহ পাঠ করেছেন। তাছাড়া এটা একটা জীবন যাপনের বিজ্ঞান। এর সাথে ধর্মের সাযুজ্য খুঁজে অহেতুক সময় নষ্ট করা ছাড়া কিছুই না। স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ মহান রাব্বুল আলামিনকে মানুষ কটাক্ষ ও নিন্দা করতে ছাড়ে না, আর কোয়ান্টামতো একজন গবেষকের গড়া সামান্য জিনিস।
    কোয়ান্টাম তথ্য ও সত্যনির্ভর সমালোচনাকে স্বাগত জানায়। লেখককের লেখার এমন অংশগুলোকেও জানাবে ইনশ্আল্লাহ আশা করি। তার লেখা প্রতিটি প্রসঙ্গ ও বক্তব্যের উপযুক্ত উত্তর কোয়ান্টামের কাছে আছে। মিথ্যাগুলোকেও সুন্দরমত চিহ্নিত করে ধরিয়ে দেয়া যাবে যদি কেউ উদ্যোগী হয়ে একটু কষ্ট স্বীকার করে সেখানে যান। তবে গোঁড়াপন্থা এবং পূর্বেই একটি নেতিবাচক সমালোচনা করার মত প্রতিজ্ঞা নিয়ে গেলে তা কাজে আসবে বলে মনে হয় না। মুক্ত মনে যান, সন্তুষ্ট হয়ে ফিরবেন ইনশ্আল্লাহ।
    লেখকের এমন লেখা প্রকাশ করার ও তার উত্তর প্রদানের মত সৎ সাহস কোয়ান্টামের আছে, এখন আমার মন্তব্যটিও প্রকাশ করার সৎ সাহস এই ব্লগ যদি রাখে প্রীত ও বাধিত হব।

    Like

    • ধন্যবাদ ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য। আপনার মন্তব্যের সারমর্ম হচ্ছে “কোয়ান্টাম মেথড বা ফাউন্ডেশনকে হেয় করার জন্য মিথ্যা গালগপ্পো দিয়ে দাঁড় করানো এই লেখাটি একটি ফালতু জিনিস!” ধরলাম লেখাটিতে প্রচুর নির্জলা মিথ্যা বিষয় দেয়া আছে, তা ভাই আপনি দয়া করে একটু সেগুলো বের করে দিননা। কেউ কেউ এই নির্জলা মিথ্যার কথাটি বলছেন ঠিকই, কিন্তু কোন অংশটি মিথ্যা তা ধরিয়ে দিচ্ছেন না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামী শিক্ষা-সংস্কৃতি-ইতিহাস বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন এবং তার আগে অনার্স করার কারণে আপনার জন্য মিথ্যাগুলো বের করা তো সহজ হবার কথা। অন্য কেউ করুক বা না করুক, আপনি দয়া করে মিথ্যাগুলো তুলে ধরুন।

      // লেখকের এমন লেখা প্রকাশ করার ও তার উত্তর প্রদানের মত সৎ সাহস কোয়ান্টামের আছে, এখন আমার মন্তব্যটিও প্রকাশ করার সৎ সাহস এই ব্লগ যদি রাখে প্রীত ও বাধিত হব। //

      এই যে ভাই, আপনার মন্তব্যটি প্রকাশ করলাম। এবার অন্য প্রান্তের সৎসাহস কবে দেখতে পাব?

      Like

    • ভাই আপনাকে একটি বিষয়ে বলতে চাই, আর সেটা হচ্ছে বাংলাদেশের যত বড় বড় আলেম আছে যেমন ডঃ সাইফুল্লাহ, ডঃ মাঞ্জুর-ই-ইলাহী, মুফতি কাজী ইবরাহিম, ডঃ আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর, ডঃ আবু বকর মোহাম্মদ জাকারিয়া, কামাল উদ্দিন জাফরী বা পীচ টিভিতে যারা বক্তব্য দেন এদের যে কাউকে আপনি জিজ্জাসা করে দেখুন তো আপনার পক্ষে কোন উত্তর বের করতে পারেন কি না।

      আলেমের নামে যারা জালেম যারা পীরের মুরিদ ইত্যাদি বিভ্রান্ত তারাই হয়ত আপনার পক্ষে কথা বলতে পারেন, আর কেউ বলবে না এটা আমি নিশ্ছিত ইনশাল্লাহ।

      আপনার কোয়ান্টাম যে একটি শিরক শেখানোর প্রতিষ্ঠান সেই বিষয়ে অন্য কেউ না জানেলেও আমি ব্যাক্তিগত ভাবে খুব ভালো করেই জানি। আর আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামী শিক্ষা-সংস্কৃতি-ইতিহাস বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করেছেন, এই ডিগ্রির চার আনার মুল্য নেই যদি না আপনি ঈমান, আকিদা, শিরক, কুফর, বিদআত এই সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করেন।
      আপনি যেহেতু তাদের পক্ষে কথা বলছেন তাই এটাতেই বোঝা যায় যে ইসলামের প্রাথমিক জ্ঞান থেকেই আপনি মাহরুম অবস্থায় আছেন। আগে দয়া করে কোরআন অর্থ ও তাফসীর সহ সাথে সহিহ হাদিস গ্রন্থ অধ্যয়ন করুন এবং এরপর আমার কমেন্টের উত্তর দেবার চেষ্টা করুন।

      Like

    • পলাশ হাসান,
      আপনি ইসলাম সম্পর্কে নেহায়েত অজ্ঞ। কোয়ান্টামে ইসলাম বিরোধী কিছু নেই , একথা বলে আপনি নিজেকে নিরেট মূর্খ প্রমান করলেন।
      কুরআন শরীফে ইরশাদ হয়েছে, নিশ্চয়ই ইসলাম একমাত্র পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা।
      তাহলে অন্য কিছু খুজতে হবে কেন?

      কোয়ান্টাম যে ধ্যান করে তা তো ইসলাম ধর্ম থেকে মূল বিষয় নিয়ে বিকৃত করে নিজের নামে চালিয়েছে।

      কারো কারো বক্তব্য মানুষ কোয়ান্টামে যায় মানসিক শক্তি লাভ করার জন্য, নিজের উপর নিয়ন্ত্রন লাভ করার জন্য।
      কিন্তু সেটা ইসলামেই রয়েগেছে।
      আল্লাহপাক ইরশাদ করেন, সাবধান আল্লাহ পাক উনার যিকির দ্বারাই অন্তর প্রশান্তি লাভ করে।
      যিকির ভালোভাবে করতে পারলে অবশ্যই অন্তর প্রশান্তি লাভ করবে।

      যারা কোয়ান্টাম চর্চা করবে তারা সুস্পষ্টভাবে কুফরী করবে।
      এর থেকে অবশ্যই তওবা করতে হবে।

      Like

    • জনাব পলাশ, ঢাবির হলে ৫ বছর আছি। ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতি বলে কোন বিভাগের নাম শুনি নি। আর যদি ইস্লাম শিক্ষা বা ইসলামের ইতিহাস বিভাগের কথা বলেন, তাহলে আমি আপনার প্রতি করুণা অনুভব করি। কারণ এ সকল বিভাগে পড়ার দ্বারা ইলম নয়, কেবল ডিগ্রিই হাসিল হয়। আর সে কারণেই কোয়ান্টামের মত বাতিল জিনিসে কেবলি “সত্য আর শুভ” খুঁজে পান। আমার কোয়াণ্টাম কর্মী বন্ধুকে হাতে বালা পরতে দেখে শুধানো হলে সে জবাব দেয় “এটি অশুভ বিষয় থেকে রক্ষা করে”। এ রকম বিশ্বাস কি শত-হাজারো লাগবে, নাকি একটিতেই ঈমান নষ্ট হবে তা যাচাই করে দেখবেন দয়া করে। আর হ্যাঁ, তা যেন কোরআন হাদিসের আলোকে হয়; আপনার মুক্তবুদ্ধির আলোকে না হয়। আল্লাহ সবাইকে হেদায়েত দিন। আমীন।

      Like

    • কোয়ান্টামের কাছে উত্তর নেই। তাই তারা কোনো উত্তর দিতে পারে না। শুধু বড় বড় কথা বলতে পারে। আল্লাহ বলেন, ‘কুন’ আর হয়ে যায়। অথচ, কোয়ান্টামে মহাজাতক বলে ‘কুন’ এবং সদস্যদেরও বলায় ‘কুন’। এটা স্পষ্ট শিরক। আপনার ইসলাম সম্পর্কে ন্যূনতম জ্ঞান থাকলে এগুলিকে ইসলামী কাজ মনে করতেন না। আপনার গুরু জন্মদিন ও ভাগ্যের বই বিক্রি করে। এটাও ইসলামের বিপক্ষে যাচ্ছে। আল্লাহ আপনার এবং আপনার জ্যোতিষী গুরুকে হেদায়েত দিন। আমিন।

      Like

  3. পলাশ হাসান, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনের ছাত্র । আমার ইসলাম শিক্ষা বিভাগে পড়া এক বন্ধু কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট । মাদ্রাসা থেকে আলিম পাশ, সে কোরআনের হাফেয ও । কিন্তু সে নামায পড়ে না, রমযান মাসে সব রোযাও রাখেনা । মিথ্যা কথা বলে, সিগারেট খায়, গার্লফ্রেন্ড আছে, ব্যভিচারও করে । নিয়মিত ক্লাস না করে কর্মচারীদের ঘুষ দিয়ে ক্লাসে উপস্থিতি ১০০% দেখায় । ফেসবুকে অশ্লীলতা চর্চা করার জন্য তার ভুয়া আইডিও আছে । সে কোরআনের হাফেয হওয়ার পর কোয়ান্টাম কোর্সে অংশ নেয় ।
    আমার ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে পড়া এক বন্ধু কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট । সিগারেট খায়, মাদ্রাসা থেকে আলিম পাশ করার পর সে কোয়ান্টাম কোর্সে অংশ নেয় । সে আগে নামাজ পড়ত, কিন্ত, এখন নামাজ পড়ে না ।
    আমার ১ জন সহপাঠিনী কোয়ান্টাম কোর্সে অংশ নেয়ার পর এখন অশ্লীল শব্দ বা বাক্য ছাড়া সে কথাই বলতে পারেনা ।
    আমার আর ১ জন সহপাহিনী কোয়ান্টাম প্রো-মাস্টার । সিগারেট খায়, বৃদ্ধ সারের অসতর্কতার সুযোগে ক্লাস পালায় ।
    আমার এক সহপাঠী কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট । কিছু দিন আগে নিয়মিত ক্লাস না করার কারণে ওর ১০০০ টাকা জরিমানা না দিয়ে কর্মচারীকে কিছু টাকা ঘুষ দিয়ে পার পায় ।
    MSC তে পড়া এক বড় ভাই কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট । সে নিজেই আমাকে বলেছে কোয়ান্টামে আসার পর তার রেজাল্ট খারাপ হয়েছে।
    আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার পরিচিত বলয়ে কোয়ান্টাম করা মানুষদের এই অবস্থা দেখছি । বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে এই অবস্থা । তাহলে সারা বাংলাদেশে কি অবস্থা হতে পারে ?

    Liked by 1 person

    • হাসালেন Toufik ভাই। আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে কোয়ান্টাম পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ স্থান। এখানে গেলে খারাপ হওয়া অনিবার্য। ভাই আমি এমন হাজারো মুসলিম চিনি যারা ইসলাম ধর্ম শুধু মুখে মুখেই পালন করে; ইসলামের জন্য জান দিয়ে দেয়, কিন্তু ইসলামকে তার জীবনধারায় যুক্ত করতে পারেনি আর কোয়ান্টাম তো দুরের কথা সামান্য জুমুয়ার নামাজেও যায়না। এটা কি ইসলাম ধর্মের দোষ? পাথর আজীবন ঝর্ণা ধারায় শিক্ত হয় কিন্তু তার অন্তরে কি কখোনো স্ফটিক জলের কণা প্রবেশ করে? করে না। সেহেতু আপনার ঐ সব বন্ধুরা কোয়ান্টাম এ না গেলেও ঐ কাজই করতো। এটা কোয়ান্টামের দোষ হতে পারে না।

      Like

      • মেহেদি হাসান ভাই, কোয়ান্টাম জীবন বদলের বিজ্ঞান হয়ে থাকলে আমার বন্ধুদের জীবনে পরিবর্তন আসলো না কি জন্য ?

        Like

  4. মানুষকে আল্লাহর ইবাদত থেকেফিরিয়ে কথিত অন্তর্গুরুর ইবাদতেলিপ্ত করার অভিনব প্রতারণার নামহ’ল কোয়ান্টাম মেথড। হাযার বছরপূর্বে ফেলে আসা হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান পাদ্রী ও যোগী-সন্ন্যাসীদের যোগ-সাধনার আধুনিক কলা-কৌশলের নাম দেওয়া হয়েছে‘মেডিটেশন’।হতাশাগ্রস্ত মানুষকে সাময়িকপ্রশান্তির সাগরে ভাসিয়ে এককল্পিত দেহভ্রমণের নাম দেওয়াহয়েছে Science of Living বা জীবন-যাপনের বিজ্ঞান। আকর্ষণীয় কথারফুলঝুরিতে ভুলে টাকাওয়ালাসাধারণ শিক্ষিত মানুষেরা এদেরপ্রতারণার ফাঁদে নিজেদেরকেসঁপে দিচ্ছেন অবলীলাক্রমে। ব্যয়করছেন কথিত ধ্যানের পিছনে ঘণ্টারপর ঘণ্টা। ঢেলে দিচ্ছেন হাযারহাযার টাকা। অথচ একটা রঙিন স্বপ্নছাড়া তাদের ভাগ্যে কিছুই জুটছেনা। অন্যদিকে মুসলমান যারা এদেরদলে ভিড়ছে, তারা শিরকেরমহাপাতকে লিপ্ত হয়ে দুনিয়া ওআখেরাত দু’টিই হারাচ্ছে। নিম্নেআমরা এদের আক্বীদা-বিশ্বাস ওকর্মনীতি যাচাই করব।-কোয়ান্টামের পঞ্চসূত্র হ’ল,প্রশান্তি, সুস্বাস্থ্য, প্রাচুর্য, সুখীপরিবার ও ধ্যান। বলা হয়েছে,কোয়ান্টাম প্রত্যেকেরধর্মবিশ্বাসকে শ্রদ্ধা করে। সুখীমানুষের সবটুকু প্রয়োজন পূরণেরপ্রক্রিয়াই রয়েছে কোয়ান্টামে।তাই কোয়ান্টামই হচ্ছে নতুনসহস্রাব্দে আধুনিক মানুষের জীবনযাপনের বিজ্ঞান’।অন্যান্য ডিগ্রীর ন্যায় এখানকারধ্যান সাধনায় যারা উত্তীর্ণ হয়,তাদেরকে ‘কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট’বলে শ্রুতিমধুর একটা ডিগ্রী দেওয়াহয়। তাদের প্রচার অনুযায়ীবাংলাদেশে ফলিতমনোবিজ্ঞানের পথিকৃৎ এবংআত্মউন্নয়নে ধ্যান পদ্ধতির প্রবর্তকপ্রফেসর এম.ইউ. আহমাদ নাকিক্লিনিক্যালি ডেড হওয়ার পরেওপুনরায় জীবন লাভ করেন শুধু ‘তাঁকেবাঁচতে হবে, তিনি ছাড়া দেশেনির্ভরযোগ্য মনোচিকিৎসক নেই’তাঁর এই দৃঢ় বিশ্বাসেরজোরে’ (মহাজাতক, কোয়ান্টামটেক্সট বুক, জানু. ২০০০, পৃঃ ২২-২৪)।অর্থাৎ হায়াত-মউতের মালিকতিনি নিজেই।প্রথমে বলে রাখি, মানবরচিতপ্রত্যেক ধর্মেই স্ব স্ব নিয়মে ধ্যানপদ্ধতি আছে। হিন্দু-বৌদ্ধ যোগী-সন্ন্যাসীদের সাধন-ভজন সম্বন্ধেআমরা কিছুটা জানি। আল্লাহপ্রেরিত ঈসায়ী ধর্মে সর্বপ্রথমসন্ন্যাসবাদের উদ্ভব হয়। যে বিষয়েআল্লাহ বলেন, ‘আর সন্ন্যাসবাদ,সেটাতো তারা নিজেরাই প্রবর্তনকরেছিল আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভেরউদ্দেশ্যে। আমরা তাদেরকে এবিধান দেইনি। অথচ এটাও তারাযথাযথভাবে পালন করেনি। তাদেরমধ্যে যারা ঈমান এনেছিল,তাদেরকে আমরা পুরস্কারদিয়েছিলাম। আর তাদেরঅধিকাংশ ছিলপাপাচারী’ (হাদীদ ৫৭/২৭)।এখানে আল্লাহ তাদেরকে দুইভাবেনিন্দা করেছেন।১. তারা আল্লাহর দ্বীনের মধ্যেবিদ‘আত অর্থাৎ নতুন রীতির উদ্ভাবনকরেছিল।২. তারা নিজেরা যেটাকেআল্লাহর নৈকট্য মনে করে আবিষ্কারকরেছিল, সেটার উপরেও তারাটিকে থাকতে পারেনি। ইসলামেরস্বর্ণযুগের পরে ভ্রষ্টতার যুগেমা‘রেফতের নামে বিদ‘আতী পীর-ফকীররা নানাবিধ ধ্যান পদ্ধতিআবিষ্কার করে। অতঃপর কথিতইশক্বের উচ্চ মার্গে পৌঁছে হুয়া হুকরতে করতে যখন চক্ষু ছানাবড়া হয়ে‘কাশফ’ বা ‘হাল’ হয়, তখন নাকিতাদের আত্মা পরমাত্মার মধ্যে লীনহয়ে যায়। একে তাদের পরিভাষায়ফানা ফিল্লাহ বা বাক্বা বিল্লাহবলে। এরাই ছূফী ও পীর-মাশায়েখনামে এদেশে পরিচিত। অথচ এইসবমা‘রেফতী তরীকার কোন অনুমোদনইসলামে নেই। ধ্যানকেকোয়ান্টামের পরিভাষায় বলা হয়‘মেডিটেশন’ (Medetation)। যার প্রথমধাপ হ’ল ‘শিথিলায়ন’ যা মনের মধ্যেধ্যানাবস্থা সৃষ্টি করে। আর শেষধাপ হ’ল মহা চৈতন্য (SuperConsciousness)। যখন তারা বস্ত্তগতসীমা অতিক্রম করে মহা প্রশান্তিরমধ্যে লীন হয়ে যায়। যদিও এর কোনসংজ্ঞা তাদের বইতে সুস্পষ্টভাবেনেই। এক্ষণে কোয়ান্টামের সাথেঅন্যদের পার্থক্য এই যে, অন্যেরা স্বস্ব ধর্মের মধ্যে বিদ‘আত সৃষ্টিকরেছে ও স্ব স্ব ধর্মের নামেইপরিচিতি পেয়েছে। পক্ষান্তরেকোয়ান্টাম মেথড সকল ধর্ম ও বর্ণেরলোকদের নতুন ধ্যানরীতিতে জমাকরেছে। খানিকটা সম্রাট আকবরেরদ্বীনে এলাহীর মত। তখন আবুল ফযল ওফৈযীর মত সেকালের সেরাপন্ডিতবর্গের মাধ্যমে সেটা চালুহয়েছিল মূলতঃ রাজনৈতিককারণে। আর এ যুগে কিছু উচ্চ শিক্ষিতসুচতুর লোকদের মাধ্যমে এটা চালুহয়েছে ইসলাম থেকে মানুষকেসরিয়ে নেবার জন্যে এবং শিক্ষিতশ্রেণীকে বিশ্বাসে ও কর্মেপুরোপুরি ধর্মনিরপেক্ষ বানাবারজন্যে। যাতে ভবিষ্যতে এদেশ তারইসলামী পরিচিতি হারিয়েসেক্যুলার দেশে পরিণত হয়। মুনি-ঋষিরা ধ্যান করে তাদের ঈশ্বরেরনৈকট্য লাভের জন্য। পক্ষান্তরেকোয়ান্টামে ধ্যান করা হয় স্ব স্ব‘অন্তর্গুরু’কে পাওয়ার জন্য। যেমন বলাহচ্ছে, ‘অন্তর্গুরুকে পাওয়ারআকাংখা যত তীব্র হবে, তত সহজেআপনি তার দর্শন লাভ করবেন। এব্যাপারে বিচিত্র সব অভিজ্ঞতাহয়েছে কোয়ান্টামগ্রাজুয়েটদের’ (পূর্বোক্ত, পৃঃ ২৪৭)।যেমন একটি ঘটনা বলা হয়েছে,‘ছেলে কোলকাতায় গিয়েছে।দু’দিন কোন খবর নেই। বাবাকোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট। মাগরিবেরনামাজ পড়ে মেডিটেশন কমান্ডসেন্টারে গিয়ে ছেলের বর্তমানঅবস্থা দেখার চেষ্টা করতেইকোলকাতার একটি সিনেমা হলেরগেট ভেসে এল। ছেলে সিনেমাহলের গেটে ঢুকছে। বাবাছেলেকে তার উদ্বেগের কথাজানালেন। বললেন শিগগীর ফোনকরতে’ (পূর্বোক্ত, পৃঃ ২৪১)।এমনিতরো উদ্ভট বহু গল্প তারা প্রচারকরেছেন।এক্ষণে আমরা দেখব ইসলামের সাথেএর সম্পর্ক :-● ১. এটি তাওহীদ বিশ্বাসের সাথেসরাসরি সাংঘর্ষিক এবংপরিষ্কারভাবে শিরক। তাওহীদবিশ্বাস সম্পূর্ণরূপে আল্লাহকেন্দ্রিক। ইসলামের সকল ইবাদতেরলক্ষ্য হ’ল আল্লাহর দাসত্ব ও রাসূল(ছাঃ)-এর আনুগত্যের মাধ্যমেআল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা ওপরকালে মুক্তি লাভ করা।পক্ষান্তরে কোয়ান্টামের ধ্যানসাধনার লক্ষ্য হ’ল অন্তর্গুরুকে পাওয়া।যা আল্লাহ থেকে সরিয়ে মানুষকেতার প্রবৃত্তির দাসত্বে আবদ্ধ করে।এদেরকে লক্ষ্য করেই আল্লাহ বলেন,‘আপনি কি দেখেছেন ঐ ব্যক্তিকে,যে তার প্রবৃত্তিকে ইলাহবানিয়েছে? আপনি কি তারযিম্মাদার হবেন’? ‘আপনি কিভেবেছেন ওদের অধিকাংশ শুনেবা বুঝে? ওরা তো পশুর মত বা তারচাইতে পথভ্রষ্ট’ (ফুরক্বান ২৫/৪৩-৪৪)।মূলতঃ ঐ অন্তর্গুরুটা হ’ল শয়তান। সেসর্বদা তাকে রঙিন স্বপ্নের মাধ্যমেতার দিকে প্রলুব্ধ করে।● ২. তারা বলেন, মনকে প্রশান্ত করারমতো নামাজ যাতে আপনি পড়তেপারেন সেজন্যই মেডিটেশন দরকার।কেননা নামাজের জন্য সবচেয়ে বড়প্রয়োজন হুযুরিল ক্বালব,একাগ্রচিত্ততা। এটা কিভাবেঅর্জিত হয়, তা এখানে এলে শেখাযায়’ (প্রশ্নোত্তর ১৪২৭)।জবাব : এটার জন্য সর্বোত্তম পন্থা হ’লছালাত। এর বাইরে কোন কিছুরঅনুমোদন ইসলামে নেই। আল্লাহবলেন, তুমি ছালাত কায়েম করআমাকে স্মরণ করার জন্য’ (ত্বোয়াহা১৪)।রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন সংকটেপড়তেন তখন ছালাতে রত হ’তেন(আবুদাঊদ হা/১৩১৯)।তিনি বলেছেন, তোমরা ছালাতআদায় কর, যেভাবে আমাকেদেখছ’ (বুখারী হা/৬৩১)।যারা খুশু-খুযুর সাথে ফরয, নফল ওতাহাজ্জুদ ছালাত নিয়মিতভাবেআদায় করে, তাদেরকেই আল্লাহসফলকাম মুমিন বলেছেন (মুমিনূন ১-২)।আর ছালাতে ধ্যান করা হয় না। বরংএকমনে বান্দা তার সৃষ্টিকর্তারসাথে একান্তে আলাপ করে(বুখারী হা/৫৩১)।সর্বোচ্চ শক্তির কাছে নিজেরদুর্বলতা ও নিজের কামনা-বাসনাপেশ করে সে হৃদয়ে সর্বোচ্চপ্রশান্তি লাভ করে এবং নিশ্চিতআশাবাদী হয়। অথচ মেডিটেশনেরকথিত অন্তর্গুরুর কোন ক্ষমতা নেই।তার সাধনায় নিশ্চিত আশাবাদেরকোন প্রশ্নই ওঠে না। কেননা ওটাতো স্রেফ কল্পনা মাত্র। ছালাতেআল্লাহর ইবাদত করা হয়। পক্ষান্তরেমেডিটেশনে অন্তর্গুরুর ইবাদত করাহয়। একটি তাওহীদ, অপরটি শিরক।দু’টিকে এক বলা দিন ও রাতকে একবলার সমান। যা চরম ধৃষ্টতারনামান্তর।● ৩. তারা বলেন, কোয়ান্টামমেডিটেশনের জন্য ধর্ম বিশ্বাসকোন যরূরী বিষয় নয়। ইসলাম বা অন্যকোনো ধর্মের সাথে এর কোনবিরোধ নেই। তাদেরকার্যাবলীতে এর প্রমাণ রয়েছে।যেমন, ‘এখন কোয়ান্টাম শিশু কাননেরয়েছে ১৫টি জাতিগোষ্ঠীর চারশতাধিক শিশু। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ,ক্রামা, খ্রিষ্টান, প্রকৃতিপূজারীসকল ধর্মের শিশুরাই যার যার ধর্মপালন করছে। আর এক সাথে গড়েউঠছে আলোকিত মানুষহিসাবে’ (শিশু কানন)।জবাব : মানুষকে সকল ধর্ম থেকে বেরকরে এনে কোয়ান্টামের নতুন ধর্মেদীক্ষা নেবার ও কোয়ান্টামনেতাদের গোলাম বানানোরচমৎকার যুক্তি এগুলি। কেননাঅন্তর্গুরুর ব্যাখ্যায় তারা বলেছেন,আধ্যাত্মিকতার পথে অগ্রসর হতেগেলে একজন আলোকিত গুরুর কাছেবায়াত বা দীক্ষা নেয়া প্রয়োজন।এছাড়া আধ্যাত্মিকতার সাধনা একপিচ্ছিল পথ। যেকোন সময়ই পাপিছলে পাহাড় থেকে একেবারেগিরিখাদে পড়ে যেতেপারেন’ (টেক্সটবুক, পৃঃ ২৪৭)।অর্থাৎ এরা ‘আলোকিত মানুষ’বানাচ্ছে না। বরং ইসলামের আলোথেকে বের করে এক অজানাঅন্ধকারে বন্দী করছে। যার পরিণামজাহান্নাম ছাড়া আর কিছুই নয়।কেননা আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তিইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীনতালাশ করবে, তা কবুল করা হবে না।ঐ ব্যক্তি আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্তদেরঅন্তর্ভুক্ত হবে’ (আলে ইমরান ৮৫)।রাসূল (ছাঃ) বলেন, আমিতোমাদের কাছে একটি উজ্জ্বল ওপরিচ্ছন্ন দ্বীন নিয়েএসেছি’ (আহমাদ, মিশকাত হা/১৭৭)।অতএবইসলামের প্রকৃত অনুসারীরাই কেবলআলোকিত মানুষ। বাকী সবাইঅন্ধকারের অধিবাসী।● ৪. তারা বলেন, বহু আলেম আমাদেরমেডিটেশন কোর্সে অংশগ্রহণ করেনএবং তারা এর সাথে ইসলামেরকোন বিরোধ নেই বলেছেন।জবাব : অল্প জ্ঞানী অথবা কপটবিশ্বাসী ও দুনিয়াপূজারীলোকেরাই চিরকাল ইসলামেরক্ষতি করেছে। আজও করছে। ওমর(রাঃ) বলেন, ইসলামকে ধ্বংস করেতিনটি বস্ত্ত : (১) আলেমদের পদস্খলন(২) আল্লাহর কিতাবে মুনাফিকদেরঝগড়া এবং (৩) পথভ্রষ্ট নেতাদেরশাসন’ (দারেমী)।মনে রাখা আবশ্যক যে, রাসূলুল্লাহ(ছাঃ)-এর জীবদ্দশায় ইসলাম পূর্ণতালাভ করেছে। অতএব যা তাঁর ও তাঁরছাহাবীগণের আমলে দ্বীনহিসাবে গৃহীত ছিল, কেবলমাত্রসেটাই দ্বীন হিসাবে গৃহীত হবে।তার বাইরে কোন কিছুই দ্বীন নয়।● ৫. মেডিটেশন পদ্ধতি নিজেরউপরে তাওয়াক্কুল করতে বলে এবংশিখানো হয় যে, ‘তুমি চাইলেই সবকরতে পার’।এরা হাতে মূল্যবান ‘কোয়ান্টামবালা’ পরে ও তার উপরে ভরসা করে।জবাব : ইসলাম মানুষকে মহাশক্তিধরআল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করতেশিখায় এবং আল্লাহ যা চান তাই হয়।এর মাধ্যমে মুমিন নিশ্চিন্ত জীবনলাভ করে ও পূর্ণ আত্মশক্তি ফিরেপায়। আর ইসলামে এ ধরনের ‘বালা’পরা ও তাবীয ঝুলানো শিরক(ছহীহাহ হা/৪৯২)।● ৬. তারা বলেন, শিথিলায়নপ্রক্রিয়ায় মানুষের মধ্যে এমন একক্ষমতা তৈরী হয়, যার দ্বারা সেনিজেই নিজের চাওয়া-পাওয়া পূরণকরতে পারে। এজন্য একটা গল্প বর্ণনাকরা হয়েছে যে, এক ইঞ্জিনিয়ারসপরিবারে আমেরিকায় বসবাসকরার মনছবি দেখতে লাগল। ফলে সেডিভি ভিসা পেয়ে গেল। তারপরসেখানে ভাল একটা চাকুরীর জন্যমনছবি দেখতে লাগল। ফলেসেখানে যাওয়ার দেড় মাসেরমধ্যেই উন্নতমানের একটা চাকুরীপেয়ে গেল’(টেক্সট বুক পৃঃ ১১৫)।জবাব : ইসলাম মানুষকে তাকদীরেবিশ্বাস রেখে বৈধভাবে সর্বোচ্চচেষ্টা করতে বলে। অথচ কোয়ান্টামসেখানে আল্লাহ থেকে মুখফিরিয়ে কথিত মনছবির পূজা করতেবলে।● ৭. কোয়ান্টামের মতে রোগের মূলকারণ হ’ল মানসিক। তাই সেখানেমনছবি বা ইমেজ থেরাপি ছাড়াও‘দেহের ভিতরে ভ্রমণ’ নামক পদ্ধতিরমাধ্যমে শরীরের নানা অঙ্গের মধ্যদিয়ে কাল্পনিক ভ্রমণ করতে বলা হয়।এতে সে তার সমস্যার স্বরূপ সম্পর্কেঅন্তর্দৃষ্টি লাভ করে এবং নিজেইকম্যান্ড সেন্টারের মাধ্যমেসমাধান করতে পারে। যেমন, একজনক্যান্সার রোগী তার ক্যান্সারেরকোষগুলিকে সরিষার দানা রূপেকল্পনা করে। আর দেখে যে অসংখ্যছোট ছোট পাখি ঐসরিষাদানাগুলো খেয়ে নিচ্ছে।এভাবে আস্তে আস্তে সর্ষে দানাওশেষ, তার ক্যান্সারও শেষ’ (টেক্সট বুকপৃঃ ১৯৪)।● ৮. এদের শোষণের একটি হাতিয়ারহ’ল ‘মাটির ব্যাংক’।যে নিয়তে এখানে টাকা রাখবেন,সে নিয়ত পূরণ হবে। প্রথমবারে পূরণনা হ’লে বুঝতে হবে মাটির ব্যাংকএখনো সন্তুষ্ট হয়নি। এভাবে টাকাফেলতেই থাকবেন। কোন মানতকরলে মাটির ব্যাংকে নির্দিষ্টপরিমাণ অর্থ দিতে হবে। পূরণ নাহলে অর্থের পরিমাণ বাড়াতেহবে। এখানে খাঁটি সোনার চেইনবা হীরার আংটি দিতে পারেন।ইমিটেশন দিলে মানত পূরণ হবে না(প্রশ্নোত্তর)।এর জন্য একটা গল্প ফাঁদা হয়েছে।যেমন, ‘মধ্যরাতে উঠে মাটিরব্যাংকে পাঁচশত টাকা রাখারসাথে সাথে মুমূর্ষু ছেলে সুস্থ হয়েগেল’ (দুঃসময়ের বন্ধু..)।প্রিয় পাঠক! বুঝতে পারছেন, কতসুচতুরভাবে মানুষকে আল্লাহ থেকেসরিয়ে নিয়ে তাদের কম্যান্ডসেন্টারে আবদ্ধ করা হচ্ছে এবং সেইসাথে মাটির ব্যাংকে টাকা ওগহনা রাখার ও তা কুড়িয়ে নেবারচমৎকার ফাঁদ পাতা হয়েছে।ইসলামের দৃষ্টিতে রোগ ও তাআরোগ্য দানের মালিক আল্লাহ।আল্লাহর হুকুম আছে বলেই মুমিন ঔষধখায়। ঔষধ আরোগ্যদাতা নয়। বরংআল্লাহ মূল আরোগ্যদাতা। এইবিশ্বাস তাকে প্রবল মানসিকশক্তিতে শক্তিমান করে তোলে।এজন্য তাকে মেডিটেশন বা কম্যান্ডসেন্টারে যাওয়ার প্রয়োজন পড়েনা। মাটির ব্যাংকে টাকারাখারও দরকার হয় না। বরং গরীবকেছাদাক্বা দিলে তার গোনাহ মাফহয় (মিশকাত হা/২৯)।● ৯. অন্যান্য বিদ‘আতীদের ন্যায়এরাও কুরআন-হাদীছের অপব্যাখ্যাকরেছে মুসলমানদের ধোঁকা দিয়েদলে ভিড়ানোর জন্য।যেমন-(ক) ‘সকল ধর্মই সত্য’ তাদের এই মতবাদেরপক্ষে সূরা কাফেরূনের ‘লাকুমদ্বীনুকুম ওয়া লিয়া দ্বীন’ শেষআয়াতটি ব্যবহার করেছে। যেন আবুজাহলের দ্বীনও ঠিক, মুহাম্মাদ(ছাঃ)-এর দ্বীনও ঠিক। এই অপব্যাখ্যাধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিকরা ওতাদের পদলেহীরা করে থাকে।কোয়ান্টামের লোকেরাও করছে।অথচ ইসলামের সারকথা একটিবাক্যেই বলা হয়েছে, ‘লা ইলাহাইল্লাল্লাহ’ আল্লাহ ছাড়া কোনমা‘বূদ নেই। একথার মধ্যে সকল ধর্ম ওমতাদর্শকে অস্বীকার করা হয়েছে।কোয়ান্টামের অন্তর্গুরু নামকইলাহটিকেও বাতিল করা হয়েছে।(খ) তারা বলেন মেডিটেশন একটিইবাদাত। যা রাসূল (ছাঃ) হেরাগুহায় করেছেন’।অথচ এটি স্রেফ তোহমত বৈ কিছু নয়।নিঃসঙ্গপ্রিয়তা আর মেডিটেশনএক নয়। তাছাড়া নবী হওয়ার পরেতিনি কখনো হেরা গুহায় যাননি।ছাহাবায়ে কেরামও কখনো এটিকরেননি।(গ) তারা সূরা জিন-এর ২৬ ও ২৭আয়াতের অপব্যাখ্যা করে বলেছেন,আল্লাহ যাকে ইচ্ছা গায়েবের খবরজানাতে পারেন। অতএব যে যাজানতে চায় আল্লাহ তাকে সেইজ্ঞান দিয়ে দেন’ (প্রশ্নোত্তর১৭৫৩)।অথচ উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে যে,আল্লাহ তাঁর মনোনীত রাসূল ছাড়াতাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারু নিকটপ্রকাশ করেন না। এ সময় তিনিসামনে ও পিছনে প্রহরী নিযুক্তকরেন’।অর্থাৎ আল্লাহ তাঁর রাসূলের নিকট‘অহি’ প্রেরণ করেন এবং তাকেশয়তান থেকে নিরাপদ রাখেন। এই‘অহি’-টাই হ’ল গায়েবের খবর, যাকুরআন ও হাদীছ আকারে আমাদেরকাছে মওজুদ রয়েছে। রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যুর পর ‘অহি’-র আগমন বন্ধ হয়েগেছে। অতএব কোয়ান্টামের গুরুরাচাইলেও গায়েবের খবর জানতেপারবেন না।(ঘ) তারা সূরা বুরূজ-এর বুরূজ অর্থ করেন‘রাশিচক্র’।যাতে আল্লাহকে বাদ দিয়েরাশিচক্র অনুযায়ী মানুষের ভাল-মন্দও শুভাশুভ নির্ধারণের বিষয়টিতাদের শিষ্যদের মনে গেঁথে যায়।অথচ এটি হিন্দু ও তারকা পূজারীদেরশিরকী আক্বীদা মাত্র।(ঙ) তারা সূরা আলে ইমরানের ১৯১আয়াতটি তাদের আবিষ্কৃতমেডিটেশনের পক্ষে প্রমাণহিসাবে দাঁড় করিয়েছেন(প্রশ্নোত্তর ১৭৫৩)।ঐ সাথে একটি জাল হাদীছকেহাতিয়ার হিসাবে ব্যবহারকরেছেন যে, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,সৃষ্টি সম্পর্কে এক ঘণ্টার ধ্যান ৭০বছরের নফল ইবাদতের চেয়েউত্তম’ (প্রশ্নোত্তর ১৭২৪)।অথচ উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে যে,আল্লাহর সৃষ্টি বিষয়ে গভীরগবেষণা তাকে আল্লাহর নিকট ক্ষমাপ্রার্থনা ও জাহান্নাম থেকেমুক্তি প্রার্থনায় উদ্বুদ্ধ করে’।কোয়ান্টামের কথিত অন্তর্গুরুরকাছে যেতে বলে না। আরহাদীছটি হ’ল জাল। যা আদৌ রাসূল(ছাঃ)-এর বাণী নয়। কোন কোনবর্ণনায় ৬০ বছর ও ১০০০ বছর বলাহয়েছে’ (সিলসিলা যঈফাহ হা/১৭১)।পরিশেষে বলব, কোয়ান্টামমেথডের পূরা চিন্তাধারাটাই হ’লতাওহীদ বিরোধী এবং শিরক প্রসূত।যা মানুষের মাথা থেকে বেরিয়েএলেও এর মূল উদ্গাতা হ’ল শয়তান।মানুষকে জাহান্নামে নেবার জন্যমানুষের নিকট বিভিন্ন পাপকর্মশোভনীয় করে পেশ করার ক্ষমতাআল্লাহ তাকে দিয়েছেন (হিজর৩৯)।তবে সে আল্লাহর কোন মুখলেছবান্দাকে পথভ্রষ্ট করতে পারে না(হিজর ৪০)।শয়তান নিজে অথবা কোন মানুষেরমাধ্যমে প্রতারণা করে থাকে।যেমন হঠাৎ করে শোনা যায়, অমুকস্থানে অমুকের স্বপ্নে পাওয়াশিকড়ে বা তাবীযে মানুষের সবরোগ ভাল হয়ে যাচ্ছে। ফলে দু’পাঁচমাস যাবত দৈনিক লাখো মানুষেরভিড় জমিয়ে হাযারো মুসলমানেরঈমান হরণ করে হঠাৎ একদিন ঐঅলৌকিক চিকিৎসক উধাও হয়ে যায়।এদের এই ধোঁকার জালে আবদ্ধহয়েছিল সর্বপ্রথম নূহ (আঃ)-এর কওম।যারা পরে আল্লাহর গযবে ধ্বংসহয়ে যায়। আমরাও যদি শিরকেরমহাপাপ থেকে দ্রুত তওবা না করি,তাহ’লে আমরাও তাঁর গযবে ধ্বংসহয়ে যাব। অতএব হে মানুষ! সাবধানহও!!(স.স.)সংগৃহীতঃ- মাসিক আত-তাহরীক

    Like

  5. পিংব্যাকঃ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন নিয়ে আর্টিকেল | Let your mind to be opened to

  6. আমিও একজন কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট ছিলাম। তবে এখন এসব ছেড়ে দিয়েছি। কারণ,
    প্রথম দিকে আমি খুভই এক্টিভ ছিলাম। কিছুদিন পর থেকে কিছুকিছু বক্তব্য ভালো লাগেনি, কিছুকিছু বক্তব্য ভাবিয়েছিল। তার পরও গুছানো কথার ফাদে হারিয়ে যাই অনেকদূর।
    যাইহোক ভুল বুঝে এবং ভুল থেকে বেরিয়ে আসতে পারায় আল্লাহর শুক্রিয়া জানাই।
    বিঃ দ্রঃ এই পোস্ট এর অনেক কিছুই আমি নিজে শুনেছি।
    # আরও শুনেছি কোয়ান্টামে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন এরকম, ধর্ম বিশ্বাসি হলে ভালো ধর্ম অবিশ্বাসি হলে আরও ভালো।
    # আল্লাহর উপর ভরসা অল্প করে। ইনশা আল্লাহ বলে অল্প।

    Like

  7. কোয়ান্টামের সাথে যখন সম্পর্ক ছিল, তখন আমি নামাজ পড়ার জন্য ভেতর থেকে তাগিদ অনুভব করতাম না । মেডিটেশনেই আসক্ত ছিলাম, এমনকি মাঝে মাঝে মনে হত যে মেডিটেশন করতে তো অযু লাগে না (নাউযুবিল্লাহ) । ২০১৩ সালে মেডিটেশনের ওপর আমার বেশ জনপ্রিয় একটি প্রবন্ধ ছাপা হয়েছিল জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় । তখন সে লেখার প্রসঙ্গে এক বন্ধু আমাকে কিছু ইন্টারনেট লিংক পাঠায় কোয়ান্টামের ভণ্ডামি সম্পর্কে জানার জন্য, পরে ওর কাছ থেকে জেনে গুগলে সার্চ দিয়ে এখানে ভিজিট করি ও আমার মনের চোখ খুলে যায় । দীর্ঘ ১১ বছরের সম্পর্ক থাকায় কোয়ান্টাম থেকে খুব সহজে দূরে সরে যেতে পারছিলাম না । ওদের ভণ্ডামি সম্পর্কে জানার পরেও বারবার ওদের অফিসে গিয়েছি আর বারবার যাচাই করার চেষ্টা করেছি এই তথ্যগুলো ঠিক কি না ? যখন তথ্যগুলো সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারলাম, তখন ওদের সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করলাম । আলহামদুলিল্লাহ্‌

    Like

  8. ভাইজান আপনি কী এই লেখাগুলো দিয়ে কোন বই করেছেন?। আমি একটি বইয়ের তথ্য সমৃদ্ধির জন্য আপনার এখান থেকে কিছু উদৃতি, বিভিন্ন বিষয়ে, আপনার দেয়া কুরআন হাদীসের ব্যখ্যা থেকে কিছু লেখা নিতে চাই।

    Like

  9. কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে ভন্ড দাবি করছেন- তা নিয়ে কোন মন্তব্য নেই। কিন্তু অাপনি কোয়ান্টাম মেকানিক্সের প্রতিষ্ঠিত, পরীক্ষিত সত্যকে বলছেন ভুল প্রমাণিত! স্রোডিন্জার ইক্যুশানের কোয়ান্টাম সুপারপজিশনকে অাপনি ভুল প্রমাণিত বলছেন? এটা তো কোয়ান্টাম মেকানিক্সের প্রতিষ্ঠিত সত্য। কোয়ান্টাম মেকানিক্সে জ্ঞান যেহেতু ভাসাভাসা তবে ঐটাকে না অানলেও পারতেন। জগাখিচুড়ি বানিয়ে ফেলছেন অাপনি। অাপনি বলতে পারতেন যে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের রহস্যকে একদল লোক ব্যবসার পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করছে যা অন্যান্য ধর্ম ব্যাবসায়ীদের মতোই অতি সাধারণ কৌশল।

    Like

এখানে মন্তব্য করুন...